স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী? কাঁচা ছোলা
ছোলা খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। ভাজা ছোলা খেতে সবাই পছন্দ করে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞই রান্নার পরিবর্তে কাঁচা ছোলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। কাঁচা ছোলা স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কাঁচা ছোলা রাখার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে।
চলুন আজ জেনে নিই কাঁচা ছোলার উপকারিতা। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন সিলেট ডায়াবেটিস ও জেনারেল হাসপাতালের ডায়াবেটিস শিক্ষাবিদ ও পুষ্টিবিদ স্বর্ণালী বিজয়া।
তিনি বলেন, কাঁচা ছোলা প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এটি দ্বিতীয় শ্রেণীর প্রোটিন বা উদ্ভিজ্জ প্রোটিন নামে পরিচিত। অনেকের সকাল শুরু হয় আগে থেকে ভেজানো ছোলা খেয়ে। আর এটি স্বাস্থ্যের জন্য একটি ভালো অভ্যাস।
প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা ছোলায় বিভিন্ন পুষ্টির পরিমাণ-
প্রোটিন – ১৮ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট – ৬৫ গ্রাম
চর্বি – ৫ গ্রাম
ক্যালসিয়াম – ২০০ গ্রাম
ভিটামিন – প্রায় ১৯২ মাইক্রোগ্রাম
এছাড়াও ভিটামিন বি১, বি২, বি ৬ এবং অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিভিন্ন খনিজ যেমন ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, কপার এবং আয়রন রয়েছে।
কাঁচা ছোলার পুষ্টিগুণ
ছোলা ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা পাকস্থলীতে বিভিন্ন ধরনের উপকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে হজমশক্তির উন্নতি ঘটায়। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমায় এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।
নিয়মিত কাঁচা ছোলা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ছোলা আয়রন সমৃদ্ধ। ফলে এটি শরীরে লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে অ্যানিমিয়ার সমস্যা প্রতিরোধ করে।
ভেজানো ছোলায় রয়েছে জটিল কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবার। এটির একটি কম গ্লাইসেমিক সূচক রয়েছে যার অর্থ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ায়। ছোলার ফাইবার রক্তে উপস্থিত গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই খালি পেটে কাঁচা ছোলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে। এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।
কাঁচা ছোলায় রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-৬, ফাইবার।
শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং এথেরোস্ক্লেরোসিস, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক প্রতিরোধ করে।
কাঁচা ছোলাতেও ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম। তাই এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় পেটকে বেশিক্ষণ ভরা রাখে। ঘন ঘন ক্ষুধামন্দা নিয়ন্ত্রণ করে।
এটি ভিটামিন সমৃদ্ধ এবং ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী। ত্বক উজ্জ্বল করে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। নিয়মিত ভেজানো ছোলা খেলে অকালে চুল পাকা রোধ হয়।
কাঁচা ছোলাতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান যেমন বুটাইরেট কোলোরেক্টাল ক্যান্সার এবং টিউমার বৃদ্ধি রোধ করে। ছোলাতে থাকা সেলেনিয়াম যৌগগুলি লিভারে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী যৌগগুলিকে ডিটক্সিফাই করে।
নিয়মিত ছোলা খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো হয়।
কাঁচা ছোলা ফোলেটের একটি ভাল উৎস, যা জেনেটিক সমস্যা যেমন নিউরাল টিউব ত্রুটি প্রতিরোধ করে।
কাঁচা ছোলায় রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, জিঙ্ক, যা হাড়ের খনিজ ঘনত্ব উন্নত করে এবং অস্টিওপোরোসিসের মতো বয়সজনিত রোগ প্রতিরোধ করে।
ছোলাতে সালফার নামক খাদ্য উপাদান থাকে যা বুকজ্বালা দূর করে।