হবিগঞ্জে সাড়ে ৪ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ ১৬ পুলিশ সদস্যসহ আহত দুই শতাধিক
হবিগঞ্জে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ১৬ পুলিশ সদস্যসহ দুই শতাধিক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের চোখে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত ৫০ জনকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকিরা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ১১টা থেকে হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও বৃন্দাবন সরকারি কলেজের সামনে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে। দুপুর ১২টার দিকে নগরীর শায়েস্তানগর এলাকায় শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল অতিক্রমকালে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনকারীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ঢুকে কর্মকর্তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রিয়াঙ্কা পালের গাড়িসহ চার থেকে পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে আন্দোলনকারীরা হবিগঞ্জ থানা ঘেরাও করে, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং থানার প্রধান ফটক ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে শায়েস্তানগর, থানার সামনে, পুরাতন হাসপাতাল রোড, মাস্টার কোয়ার্টার, স্টাফ কোয়ার্টারসহ আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলামসহ ১৬ পুলিশ সদস্য আহত হন। সব মিলিয়ে আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ। এদের মধ্যে অর্ধশতাধিককে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, আহতদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ। হবিগঞ্জ শহরতলীর আলমপুর এলাকার আদিব (২২) নামে এক যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আন্দোলনকারীদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলো কে বলেন, দুপুর ১২টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর থেকে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব প্রথম আল কে বলেন, হঠাৎ করেই থানা ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তাই আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় পুলিশের ১৫ থেকে ১৬ জন সদস্য আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।