প্ভিউ ইটিসি  | বাংলা নিউজ পেপার
শনিবার , ২৭ জুলাই ২০২৪ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. আন্তর্জাতিক
  3. আন্দোলন
  4. আরব নিউজ
  5. ইসলাম
  6. ক্রিকেট
  7. খেলাধুলা
  8. চাকরি
  9. জয়পুরহাট
  10. জাতীয়
  11. জেলার খবর
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. পরামর্শ
  14. প্রবাস
  15. ফুটবল

এমন দেশ ইন্টারনেট বন্ধ রাখে যে দেশে গণতন্ত্র সুসংহত নয়

প্রতিবেদক
ভিউ ইটিসি
জুলাই ২৭, ২০২৪ ৩:১৬ অপরাহ্ণ
এমন দেশ ইন্টারনেট বন্ধ রাখে যে দেশে গণতন্ত্র সুসংহত নয়

দেশে ইন্টারনেট এখনো স্বাভাবিক হয়নি। সরকারি নির্দেশে বন্ধ রয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা।

সরকার প্রায়ই বিক্ষোভ ও ভিন্নমত দমন করতে দেশে ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দেয়। কিন্তু তা মোবাইল ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে। এবার কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, গুলি ও বিভিন্ন সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগের কারণে টানা পাঁচ দিন সারাদেশে সব ধরনের ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। ইন্টারনেট এখনো স্বাভাবিক হয়নি। সরকারি নির্দেশে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা এখনও বন্ধ রয়েছে।

যে সব দেশে গণতন্ত্র সুসংহত নয় সেসব দেশে এ ধরনের পরিস্থিতি বেশি দেখা যায়। ইন্টারনেট ছাড়া বাংলাদেশ কার্যত বিশ্বের যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। এ অবস্থায় ডাটা সেন্টারে নাশকতার বিষয়টি সামনে এনেছে সরকার। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধের সঙ্গে ডেটা সেন্টারের ক্ষতির কোনো সম্পর্ক নেই।

বিশ্বের কোন দেশ কতক্ষণ ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখে সে সম্পর্কে কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা আপডেট তথ্য প্রদান করে। তেমনই একটি সংগঠন হল ‘ইন্টারনেট সোসাইটি’। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এই অলাভজনক সংস্থাটি সাধারণ মানুষের কাছে ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়ার জন্য কাজ করে। গত শুক্রবার তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, বাংলাদেশে ৫ দিন ১২ ঘণ্টা (১৮-২৩ জুলাই) ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ ছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মহাখালীর ওই স্থান থেকে সারা দেশে প্রায় ৩০ শতাংশ ইন্টারনেট সরবরাহ করা হয়। ফলে সেখানে ডাটা সেন্টার বন্ধ থাকলেও সারা দেশের ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকার কথা নয়।

মার্কিন ভিত্তিক বিষয়বস্তু বিতরণ নেটওয়ার্ক ক্লাউডফ্লেয়ার আউটেজ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়া ইন্টারনেট বিভ্রাটের শুরুতে রয়েছে। গত ২৫ জুলাই সরকারি নির্দেশে কয়েক ঘণ্টার জন্য সারা দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। সিরিয়ার পরেই বাংলাদেশ। ক্লাউডফ্লেয়ার উল্লেখ করেছে যে ১৭ জুলাই মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে। সেখানে সরকারের নির্দেশে বন্ধের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

বিভিন্ন বৈশ্বিক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব দেশে গণতন্ত্র সুসংহত হয়নি বা আইনের শাসনের মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে, সেসব দেশের সরকার নিজেদের সুবিধামত ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়।

মোঃ সাইমুম রেজা তালুকদার, সিনিয়র লেকচারার, আইন বিভাগ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, গুলি ও অগ্নিসংযোগের মধ্যে গত ১৯ জুলাই মধ্যরাত থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে শিথিল করা হলেও কারফিউ এখনও বলবৎ রয়েছে। কারফিউ শুরুর আগে ১৭ জুলাই বুধবার মধ্যরাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা এবং ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করা হয়। এর পাঁচ দিন পর ২৩ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু করা হয়। সীমিত ভিত্তিতে। তবে বাংলাদেশে বন্ধ হয়ে গেছে বিশ্বের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও টিকটক। হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রাম পরিষেবাগুলি এখনও স্বাভাবিক হয়নি।

ইন্টারনেট বন্ধের সরকারের আত্মঘাতী সিদ্ধান্তকে বিক্ষোভ বা আন্দোলন দমনের হাতিয়ার হিসেবে অভিহিত করেছে টিআইবি। গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশকে যেভাবে বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, এর মূল উদ্দেশ্য অবাধ তথ্য ও মতপ্রকাশ রোধ করা, তা সহজেই অনুমেয়।

গত ১৮ জুলাই মহাখালীর দুর্যোগ ভবনে আগুন লাগে। এই ভবনের পাশের তিনটি বিল্ডিংয়ে কয়েকটি ইন্টারনেট প্রোভাইডারের ডেটা সেন্টারসহ আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) কোম্পানির অফিস রয়েছে। প্রথম আলো বেশ কিছু ইন্টারনেট প্রোভাইডারের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আগুনে এসব ভবনের বাইরের কয়েকটি তারের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও, আগুন যাতে ছড়িয়ে না যায় সেজন্য ডেটা সেন্টারের সাথে সংযুক্ত কিছু তারগুলি কেটে দেওয়া হয়েছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মহাখালীর ওই স্থান থেকে সারা দেশে প্রায় ৩০ শতাংশ ইন্টারনেট সরবরাহ করা হয়। ফলে সেখানে ডাটা সেন্টার বন্ধ থাকলেও সারা দেশের ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকার কথা নয়।

বিভিন্ন বৈশ্বিক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব দেশে গণতন্ত্র সুসংহত হয়নি বা আইনের শাসনের মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে, সেসব দেশের সরকার নিজেদের সুবিধামত ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়। এর মাধ্যমে সরকার সহজেই জনগণের মতামত ও তথ্য প্রকাশের অধিকার ক্ষুণ্ন করতে পারে। একই সঙ্গে ইন্টারনেটকে বিচ্ছিন্ন রেখে মানুষ নিগৃহীত হতে পারে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক ড. সাইমুম রেজা তালুকদার

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক 18 জুলাই ইন্টারনেট বন্ধের কারণ হিসেবে জাতীয় ও নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে আনেন। পরে অবশ্য তিনি বলেন, মহাখালীতে অবস্থিত ডাটা সেন্টারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ইন্টারনেট পরিষেবা। নিচে ছিল।

নিউইয়র্ক-ভিত্তিক অ্যাক্সেস নাও, যা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে এবং কিপিটঅন কোয়ালিশন, যা ইন্টারনেট বন্ধের ক্ষেত্রে কাজ করে। তারা ইন্টারনেটে সর্বশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিন্নমত দমনের জন্য ১৫টি দেশে ৬৩ বার ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা হয়। এ তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে। এ ছাড়া বারবার সেবা বন্ধ রাখার তালিকায়ও বাংলাদেশের নাম রয়েছে। কিপইটঅন কোয়ালিশন বাংলাদেশ সরকারকে ইন্টারনেট চালু করার জন্য ১৯ জুলাই আহ্বান জানিয়েছিল।

ইন্টারনেট বন্ধ রাখার বিষয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মো. সাইমুম রেজা তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন বৈশ্বিক গবেষণায় এটা দেখা গেছে, যেসব দেশে গণতন্ত্র সুসংহত নয় বা আইনের শাসনের ক্ষেত্রে ব্যাপক ঘাটতি আছে, সেসব দেশের সরকার নিজেদের সুবিধামতো ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়। এর মাধ্যমে সহজেই জনগণের মতপ্রকাশ ও তথ্য জানার অধিকারকে খর্ব করতে পারে সরকার। একই সঙ্গে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন রেখে জনগণের ওপর দমনপীড়ন করা যায়।

সর্বশেষ - ক্রিকেট