মালয়েশিয়ার প্রবাসীরা বৈধ মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে
মালয়েশিয়ার প্রবাসীরা আইনি মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। নতুন সরকারের অধীনে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীরা মালয়েশিয়ার এক্সচেঞ্জ হাউসে ভিড় জমায়।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউসে প্রবাসীর সংখ্যা বেড়েছে। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউসের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ৬ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত প্রবাসীরা প্রায় ১২৫ থেকে ১৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৫ হাজার ৭০০ মিলিয়ন টাকা, মালয়েশিয়া থেকে ব্যাংকিং মাধ্যমে পাঠিয়েছেন।
এদিকে, শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে ৫ আগস্ট। পতনের আগে এবং একদিন পর ১ আগস্ট থেকে ৬ আগস্টের মধ্যে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল $৯৫.৬৫ মিলিয়ন। এবং পতনের পরে, 7 থেকে 10 আগস্ট পর্যন্ত রেমিট্যান্স $ 387.12 মিলিয়নে এসে পৌঁছেছে। সব মিলিয়ে চলতি আগস্টের প্রথম ১০ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৮২ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন, ইন্টারনেট ও সংঘর্ষের কারণে গত মাসে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স বন্ধের ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে ওই মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেও তা অব্যাহত ছিল। তবে সরকারের পতনের পর রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তারা। এ ছাড়া মানি লন্ডারিং রোধে হুন্ডিতে টাকা না পাঠানোর আহ্বান জানান সংশ্লিষ্টদের।
তাদের মতে, শেখ হাসিনার পতনের পর দেশে হুন্ডি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। মানি লন্ডারিং, আন্ডার বা ওভার ইনভয়েসিংয়ের মতো প্রতারণামূলক অনুশীলন বন্ধ হওয়ায় বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। তারা বলছেন, যতদিন অন্তর্বর্তী সরকার থাকবে ততদিন হুন্ডি কম থাকবে। যেমনটি হয়েছিল কোভিডের সময়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই মাসে প্রবাসী আয় ছিল প্রায় ১ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। তবে এর আগের জুন মাসে আয় হয়েছিল ২.৫ বিলিয়ন ডলার। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। এটি রেমিট্যান্স বন্ধ হিসাবে পরিচিত। তবে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশ গঠনে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী বলেন, প্রায় ১১ বছর পর ব্যাংকে টাকা পাঠাতে আসছি। এখন থেকে আমি বিকাশ বা হুন্ডির মাধ্যমে নয়, ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাব। ব্যাংকে টাকা পাঠালে দেশের উন্নতি হবে। আইনের সুশাসন, প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ করা, অভিবাসন খরচ কমানো এবং প্রবাসীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। তারা মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের প্রতিও আহ্বান জানান।
প্রবাসীরা বলেন, “বিমানবন্দরে অনেক ধরনের দুর্ভোগ আছে। সেসব ভোগান্তি অবিলম্বে দূর করা উচিত। প্রবাসীরা দৃঢ়ভাবে বলছেন, রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের যে ক্ষতি হয়েছে তা ফিরিয়ে আনবেন।