ড. ইউনূস কানাডাকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানালেন
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে পুনর্গঠনে সহায়তা করতে কানাডাকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস এ আহ্বান জানান।
প্রফেসর ইউনূস দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ এবং উন্নয়ন সংস্থা সহ কানাডার সাথে তার দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের কথা স্মরণ করে বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে তার সরকারের কানাডার সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, তার গল্প কানাডার স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। “আমাদের বড় বিনিয়োগ দরকার,” তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এমন একটি অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে যা ব্যাপক ঋণের কারণে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল। “আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হল অর্থনীতি ঠিক করা,” তিনি বলেছিলেন। তিনি বলেন, “সরকার আগের শাসনামলে ভেঙে পড়া গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকেও পুনরুদ্ধার করছে এবং শাসনে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনছে।”
আরও পড়ুন: চার দিন পর মেয়েকে খুঁজে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি
কানাডার হাইকমিশনার বলেছেন, তার সরকার প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, কানাডা সার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে আগ্রহী। তিনি বলেন, উত্তর আমেরিকার দেশগুলো থেকে বাণিজ্য পছন্দ অব্যাহত রাখার প্রয়াসে বাংলাদেশকে অবশ্যই কারখানায় শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ব্র্যান্ডের পোশাক কেনার উদ্বেগ দূর করার জন্য তার সরকার “আইএলও (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) মানদণ্ডের সাথে” শ্রমিকদের অধিকার সমুন্নত রাখবে।
মিসেস নিকোলস বলেন, জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার বিচার ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার জন্য কানাডা জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনকে সমর্থন করতেও আগ্রহী।
ইউনূস বলেন, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিপ্লব দেশের জন্য নতুন আশার সঞ্চার করেছে। তিনি বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক সুযোগ। এই সুযোগ আর কখনো ফিরে নাও আসতে পারে। তিনি বলেন, দেশে নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী সংস্কার করা হবে। বিগত সরকারের আমলে ‘নির্বাচন কমিশনকে কমিশনে পরিণত করা হয়েছিল।’ নির্বাচনী কারচুপির।’
কানাডার হাইকমিশনার দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার বিষয়ে “গভীর উদ্বেগ” প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, কানাডা রোহিঙ্গাদের জন্য ৬০ কোটি ডলারের বেশি মানবিক সহায়তা দিয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের জন্য জীবিকার সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভিড় কমাতে কক্সবাজার ক্যাম্প থেকে কিছু রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়ে বলেন, তার সরকার রোহিঙ্গা তরুণদের মধ্যে আশা জাগানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।
